০৬:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আল-মুসাওয়ার—যিনি মাতৃগর্ভে আকৃতি নির্ধারণ করেন

আল্লাহ্‌ তাআলার সুন্দর নামসমূহের মধ্যে একটি হলো আল-মুসাওয়ার, যার অর্থ আকৃতি দানকারী বা রূপ প্রদানকারী। তিনি একমাত্র সত্তা যিনি সৃষ্টির অবয়ব, বৈশিষ্ট্য, সৌন্দর্য ও অনন্যতা নির্ধারণ করেন। মানুষের হোক বা প্রাণীর, গাছপালা হোক বা প্রকৃতির অন্য কোনো সৃষ্টি—প্রতিটি জিনিসের আকার, রঙ, উচ্চতা, বৈশিষ্ট্য, এমনকি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোষের বিন্যাসও তিনি নির্ধারণ করেন তাঁর অসীম জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায়। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্‌ বলেন— “তিনিই আল্লাহ, যিনি তোমাদের মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা আকার দেন। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:৬) আল-মুসাওয়ারের এই গুণ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানুষ বা অন্য কোনো সৃষ্টির চেহারা, রঙ, সক্ষমতা বা সীমাবদ্ধতা—সবই আল্লাহ্‌র নির্ধারিত। এর পেছনে রয়েছে গভীর জ্ঞান ও হিকমাহ। তাই অহংকার, আত্মগর্ব বা হীনমন্যতা কোনো কিছুরই স্থান নেই। বরং প্রত্যেকের উচিত নিজের সৃষ্ট রূপ ও বৈশিষ্ট্যের জন্য আল্লাহ্‌র প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন, সন্তান জন্মের পর বা নিজের রূপের জন্য গর্বিত না হয়ে, আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে। হাদিসে এসেছে—যে ব্যক্তি আয়নায় নিজের মুখ দেখে “আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি হাসসানা খালকি ওয়া শাক্কলা সুবুরা” (সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি আমার আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং সঠিকভাবে গঠন দিয়েছেন) বলে, আল্লাহ্‌ তাকে সন্তুষ্ট রাখেন। দৈনন্দিন জীবনে এ গুণের প্রভাব হলো নিজের ও অন্যের শারীরিক রূপের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, বৈষম্য, অপমান বা উপহাস থেকে বিরত থাকা, সৃষ্টির বৈচিত্র্যে আল্লাহ্‌র সৃষ্টিশীলতার নিদর্শন খুঁজে পাওয়া এবং যে কোনো আকৃতি বা শিল্পকর্ম দেখেও আল্লাহ্‌র সৃষ্টিশক্তি স্মরণ করা। এটি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে বিনয়, কৃতজ্ঞতা এবং ন্যায়বোধ গড়ে তোলে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আল-মুসাওয়ার—যিনি মাতৃগর্ভে আকৃতি নির্ধারণ করেন

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:২৩:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

আল্লাহ্‌ তাআলার সুন্দর নামসমূহের মধ্যে একটি হলো আল-মুসাওয়ার, যার অর্থ আকৃতি দানকারী বা রূপ প্রদানকারী। তিনি একমাত্র সত্তা যিনি সৃষ্টির অবয়ব, বৈশিষ্ট্য, সৌন্দর্য ও অনন্যতা নির্ধারণ করেন। মানুষের হোক বা প্রাণীর, গাছপালা হোক বা প্রকৃতির অন্য কোনো সৃষ্টি—প্রতিটি জিনিসের আকার, রঙ, উচ্চতা, বৈশিষ্ট্য, এমনকি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোষের বিন্যাসও তিনি নির্ধারণ করেন তাঁর অসীম জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায়। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্‌ বলেন— “তিনিই আল্লাহ, যিনি তোমাদের মাতৃগর্ভে যেভাবে ইচ্ছা আকার দেন। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:৬) আল-মুসাওয়ারের এই গুণ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানুষ বা অন্য কোনো সৃষ্টির চেহারা, রঙ, সক্ষমতা বা সীমাবদ্ধতা—সবই আল্লাহ্‌র নির্ধারিত। এর পেছনে রয়েছে গভীর জ্ঞান ও হিকমাহ। তাই অহংকার, আত্মগর্ব বা হীনমন্যতা কোনো কিছুরই স্থান নেই। বরং প্রত্যেকের উচিত নিজের সৃষ্ট রূপ ও বৈশিষ্ট্যের জন্য আল্লাহ্‌র প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন, সন্তান জন্মের পর বা নিজের রূপের জন্য গর্বিত না হয়ে, আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে। হাদিসে এসেছে—যে ব্যক্তি আয়নায় নিজের মুখ দেখে “আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি হাসসানা খালকি ওয়া শাক্কলা সুবুরা” (সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য, যিনি আমার আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং সঠিকভাবে গঠন দিয়েছেন) বলে, আল্লাহ্‌ তাকে সন্তুষ্ট রাখেন। দৈনন্দিন জীবনে এ গুণের প্রভাব হলো নিজের ও অন্যের শারীরিক রূপের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, বৈষম্য, অপমান বা উপহাস থেকে বিরত থাকা, সৃষ্টির বৈচিত্র্যে আল্লাহ্‌র সৃষ্টিশীলতার নিদর্শন খুঁজে পাওয়া এবং যে কোনো আকৃতি বা শিল্পকর্ম দেখেও আল্লাহ্‌র সৃষ্টিশক্তি স্মরণ করা। এটি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে বিনয়, কৃতজ্ঞতা এবং ন্যায়বোধ গড়ে তোলে।