০১:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সব কথা শোনেন আল্লাহ’ আল্লাহ সর্বশ্রোতা

আস-সামী‘ (السميع) – সর্বশ্রোতা

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সুন্দর নামগুলোর মধ্যে অন্যতম নাম হলো আস-সামী‘। এর অর্থ হচ্ছে সর্বশ্রোতা। আল্লাহ তাআলা এমন এক সত্তা যিনি প্রকাশ্য বা গোপন, উচ্চকণ্ঠ বা ক্ষীণকণ্ঠ, দৃশ্যমান বা অন্তরের ফিসফিস— সবকিছুই শুনতে পান। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ একসাথে যদি প্রার্থনা করে, আল্লাহর শ্রবণশক্তিতে কোনো সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় না। তিনি প্রত্যেকের আহ্বান শোনেন, প্রত্যেকের চাওয়া বোঝেন এবং তাঁর ইচ্ছামতো সাড়া দেন।


কুরআনে আস-সামী‘ নামের প্রমাণ

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বহুবার নিজেকে সর্বশ্রোতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সূরা আল-মুজাদিলা-তে আল্লাহ বলেন— “নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (আল-মুজাদিলা: 1)। আবার সূরা ইবরাহীমে আল্লাহ বলেন— “নিশ্চয়ই আমার প্রভু দোয়া শোনেন।” (ইবরাহীম: 39)। এসব আয়াত প্রমাণ করে যে, মানুষের প্রতিটি দোয়া, প্রতিটি উচ্চারণ, প্রতিটি আর্তনাদ, এমনকি মনের অতি ক্ষুদ্র চিন্তাও আল্লাহ শুনতে পান। কারও দোয়া কখনোই আল্লাহর কাছে অশ্রুত থাকে না।


হাদিসে আস-সামী‘-এর গুরুত্ব

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন— “তোমাদের প্রভু লজ্জাশীল ও দানশীল। বান্দা যখন তাঁর দিকে হাত তোলে, তখন তিনি তা খালি ফেরাতে লজ্জা পান।” (আবু দাউদ, তিরমিজি)। এ হাদিস আমাদের শেখায় যে, আল্লাহ বান্দার প্রতিটি দোয়া শোনেন এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তা কবুল করেন। অনেক সময় দোয়ার ফল আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পাই, কখনো উত্তম কিছু দিয়ে পাই, আবার কখনো কোনো বিপদ থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যমে পাই।


আস-সামী‘ নাম থেকে শিক্ষা

আল্লাহ সর্বশ্রোতা— এই বিশ্বাস বান্দাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। মানুষ বুঝতে পারে যে, তার প্রতিটি কথা, প্রতিটি গোপন আলাপ, এমনকি অন্তরের ভাবনাও আল্লাহর কাছে গোপন নয়। এর ফলে বান্দা তার জিহ্বাকে অন্যায়ের কথা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। একইসাথে বান্দা সবসময় আশাবাদী থাকে যে, তার দোয়া আল্লাহ অবশ্যই শুনছেন এবং যথাসময়ে সাড়া দেবেন। অন্যদিকে, জালেমকে এ নাম স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মজলুমের আর্তনাদ আল্লাহ শুনছেন এবং একদিন ন্যায়বিচার অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে।


বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ

আস-সামী‘ নামটি বান্দাকে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হতে শেখায়। যখন কেউ কষ্টে থাকে, যখন সে একা থাকে, যখন কোনো বন্ধু বা আত্মীয় পাশে থাকে না— তখনও সে নিশ্চিত হতে পারে যে, আল্লাহ তার কণ্ঠ শুনছেন। তাই বান্দার উচিত দুঃসময়ে কিংবা সুখের সময় সবসময় আল্লাহর দিকে ফিরে আসা, তাঁর কাছে দোয়া করা এবং তাঁর স্মরণে আত্মাকে শান্ত করা।


দোয়া

اللَّهُمَّ يَا سَمِيعُ، اسْمَعْ دُعَاءَنَا وَتَقَبَّلْ مَسْأَلَتَنَا
“হে সর্বশ্রোতা আল্লাহ! আমাদের দোয়া শুনুন এবং আমাদের প্রার্থনা কবুল করুন।”


ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সব কথা শোনেন আল্লাহ’ আল্লাহ সর্বশ্রোতা

প্রকাশিত হয়েছে: ০৬:৫৪:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আস-সামী‘ (السميع) – সর্বশ্রোতা

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার সুন্দর নামগুলোর মধ্যে অন্যতম নাম হলো আস-সামী‘। এর অর্থ হচ্ছে সর্বশ্রোতা। আল্লাহ তাআলা এমন এক সত্তা যিনি প্রকাশ্য বা গোপন, উচ্চকণ্ঠ বা ক্ষীণকণ্ঠ, দৃশ্যমান বা অন্তরের ফিসফিস— সবকিছুই শুনতে পান। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ একসাথে যদি প্রার্থনা করে, আল্লাহর শ্রবণশক্তিতে কোনো সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় না। তিনি প্রত্যেকের আহ্বান শোনেন, প্রত্যেকের চাওয়া বোঝেন এবং তাঁর ইচ্ছামতো সাড়া দেন।


কুরআনে আস-সামী‘ নামের প্রমাণ

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বহুবার নিজেকে সর্বশ্রোতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সূরা আল-মুজাদিলা-তে আল্লাহ বলেন— “নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (আল-মুজাদিলা: 1)। আবার সূরা ইবরাহীমে আল্লাহ বলেন— “নিশ্চয়ই আমার প্রভু দোয়া শোনেন।” (ইবরাহীম: 39)। এসব আয়াত প্রমাণ করে যে, মানুষের প্রতিটি দোয়া, প্রতিটি উচ্চারণ, প্রতিটি আর্তনাদ, এমনকি মনের অতি ক্ষুদ্র চিন্তাও আল্লাহ শুনতে পান। কারও দোয়া কখনোই আল্লাহর কাছে অশ্রুত থাকে না।


হাদিসে আস-সামী‘-এর গুরুত্ব

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন— “তোমাদের প্রভু লজ্জাশীল ও দানশীল। বান্দা যখন তাঁর দিকে হাত তোলে, তখন তিনি তা খালি ফেরাতে লজ্জা পান।” (আবু দাউদ, তিরমিজি)। এ হাদিস আমাদের শেখায় যে, আল্লাহ বান্দার প্রতিটি দোয়া শোনেন এবং তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তা কবুল করেন। অনেক সময় দোয়ার ফল আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পাই, কখনো উত্তম কিছু দিয়ে পাই, আবার কখনো কোনো বিপদ থেকে মুক্তি লাভের মাধ্যমে পাই।


আস-সামী‘ নাম থেকে শিক্ষা

আল্লাহ সর্বশ্রোতা— এই বিশ্বাস বান্দাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। মানুষ বুঝতে পারে যে, তার প্রতিটি কথা, প্রতিটি গোপন আলাপ, এমনকি অন্তরের ভাবনাও আল্লাহর কাছে গোপন নয়। এর ফলে বান্দা তার জিহ্বাকে অন্যায়ের কথা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে। একইসাথে বান্দা সবসময় আশাবাদী থাকে যে, তার দোয়া আল্লাহ অবশ্যই শুনছেন এবং যথাসময়ে সাড়া দেবেন। অন্যদিকে, জালেমকে এ নাম স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মজলুমের আর্তনাদ আল্লাহ শুনছেন এবং একদিন ন্যায়বিচার অবশ্যই প্রতিষ্ঠিত হবে।


বাস্তব জীবনে এর প্রয়োগ

আস-সামী‘ নামটি বান্দাকে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হতে শেখায়। যখন কেউ কষ্টে থাকে, যখন সে একা থাকে, যখন কোনো বন্ধু বা আত্মীয় পাশে থাকে না— তখনও সে নিশ্চিত হতে পারে যে, আল্লাহ তার কণ্ঠ শুনছেন। তাই বান্দার উচিত দুঃসময়ে কিংবা সুখের সময় সবসময় আল্লাহর দিকে ফিরে আসা, তাঁর কাছে দোয়া করা এবং তাঁর স্মরণে আত্মাকে শান্ত করা।


দোয়া

اللَّهُمَّ يَا سَمِيعُ، اسْمَعْ دُعَاءَنَا وَتَقَبَّلْ مَسْأَلَتَنَا
“হে সর্বশ্রোতা আল্লাহ! আমাদের দোয়া শুনুন এবং আমাদের প্রার্থনা কবুল করুন।”