০৫:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৮ মাস পর মণিপুরে মোদী, শান্তি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ২৮ মাস অশান্ত পরিস্থিতির পর সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মিজোরামের কর্মসূচি শেষ করে তিনি মণিপুরের ইম্ফল ও চুরাচাঁদপুরে পৌঁছান। কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার পর জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মণিপুরকে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা হবে এবং শান্তি স্থাপনের জন্য সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি জানান, পাহাড় ও উপত্যকার বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার কাজ শুরু হয়েছে এবং শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য শান্তি ফেরানো জরুরি।

মোদী বলেন, অতীতে দিল্লি থেকে প্রকল্প ঘোষণা হলেও মণিপুরে পৌঁছাতে সময় লেগে যেত দশকের পর দশক, কিন্তু এখন আর তা হয় না। তিনি উন্নয়ন, নারীকল্যাণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ খাতের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। চুরাচাঁদপুর ও ইম্ফলে তিনি একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং ভিটেহারা পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর মণিপুরে এখনো অশান্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এ সময়ের মধ্যে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এতদিন মণিপুর না আসায় বিরোধীরা তার সমালোচনা করেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল।

সফরের আগে পুরো মণিপুরে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লাও জনসভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে উন্নয়ন ও নিরাপত্তা দুটিতেই সরকারের সমান নজর রয়েছে।

সিনিয়র সাংবাদিক মায়ুম শর্মার মতে, এতদিন মানুষের একটাই প্রশ্ন ছিল— প্রধানমন্ত্রী কবে মণিপুরে আসবেন। তার মতে, সফর মূলত উন্নয়নমূলক প্রকল্প কেন্দ্রিক হলেও শান্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ। অবসরপ্রাপ্ত আইএএস কর্মকর্তা পি শরৎচন্দ্র বলেন, মণিপুর এখনো স্বাভাবিক হয়নি এবং মানুষ জানতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী কী করবেন যাতে বাস্তব পরিস্থিতির উন্নতি হয়।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

২৮ মাস পর মণিপুরে মোদী, শান্তি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি

প্রকাশিত হয়েছে: ০৬:৩৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে ২৮ মাস অশান্ত পরিস্থিতির পর সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) মিজোরামের কর্মসূচি শেষ করে তিনি মণিপুরের ইম্ফল ও চুরাচাঁদপুরে পৌঁছান। কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার পর জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মণিপুরকে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা হবে এবং শান্তি স্থাপনের জন্য সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি জানান, পাহাড় ও উপত্যকার বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার কাজ শুরু হয়েছে এবং শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য শান্তি ফেরানো জরুরি।

মোদী বলেন, অতীতে দিল্লি থেকে প্রকল্প ঘোষণা হলেও মণিপুরে পৌঁছাতে সময় লেগে যেত দশকের পর দশক, কিন্তু এখন আর তা হয় না। তিনি উন্নয়ন, নারীকল্যাণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ খাতের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। চুরাচাঁদপুর ও ইম্ফলে তিনি একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং ভিটেহারা পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর মণিপুরে এখনো অশান্ত অবস্থা বিরাজ করছে। এ সময়ের মধ্যে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এতদিন মণিপুর না আসায় বিরোধীরা তার সমালোচনা করেছে এবং স্থানীয়দের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল।

সফরের আগে পুরো মণিপুরে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লাও জনসভায় বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, সীমান্তবর্তী এই রাজ্যে উন্নয়ন ও নিরাপত্তা দুটিতেই সরকারের সমান নজর রয়েছে।

সিনিয়র সাংবাদিক মায়ুম শর্মার মতে, এতদিন মানুষের একটাই প্রশ্ন ছিল— প্রধানমন্ত্রী কবে মণিপুরে আসবেন। তার মতে, সফর মূলত উন্নয়নমূলক প্রকল্প কেন্দ্রিক হলেও শান্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ। অবসরপ্রাপ্ত আইএএস কর্মকর্তা পি শরৎচন্দ্র বলেন, মণিপুর এখনো স্বাভাবিক হয়নি এবং মানুষ জানতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী কী করবেন যাতে বাস্তব পরিস্থিতির উন্নতি হয়।