০৯:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি হামলা, কাতারের পাশে আরব-বিশ্ব

কাতারের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর দোহায় সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আরব-ইসলামিক বিশ্বের নেতাদের জরুরি শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনে কাতারের প্রতি সমর্থন জানাতে একজোট হয়েছেন আরব লীগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলো। গত সপ্তাহে দোহায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন সদস্য নিহত হলেও শীর্ষ নেতারা অক্ষত রয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে, যা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে। ২০২০ সালে আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল।

রোববার বৈঠকে বসেন আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং খসড়া প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত বলেন, “এই সম্মেলনের বার্তা হলো কাতার একা নয়, আরব ও ইসলামি দেশগুলো তার পাশে রয়েছে।” ৯ সেপ্টেম্বরের হামলার পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কাতারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কাতারকে হামাস নেতাদের বহিষ্কার অথবা বিচারের মুখোমুখি করতে হবে, নতুবা ইসরায়েল নিজেরাই ব্যবস্থা নেবে।

কাতার গত দুই বছর ধরে গাজা যুদ্ধের অবসানে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশটি অভিযোগ করছে, ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করছে এবং নেতানিয়াহু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছেন। দোহায় ইসরায়েলি হামলায় কাতারের নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যও নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এ ধরনের হামলা ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেয় না। তিনি কাতারকে “ঘনিষ্ঠ মিত্র” আখ্যা দিয়ে বলেন, দেশটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কঠোর পরিশ্রম করছে। যদিও হামাসকে নির্মূল করাকে তিনি সঠিক লক্ষ্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে ট্রাম্প আশ্বস্ত করেছেন যে এ ধরনের হামলা কাতারের মাটিতে আর ঘটবে না।

নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, কাতারে অবস্থানরত হামাস নেতাদের নির্মূলের মাধ্যমেই গাজায় বন্দি জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভব। এদিকে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে স্থানীয় হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নেওয়া হয়। বর্তমানে হামাসের হাতে এখনও ৪৮ জন জিম্মি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে বন্দিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতার।


ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি হামলা, কাতারের পাশে আরব-বিশ্ব

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কাতারের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর দোহায় সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আরব-ইসলামিক বিশ্বের নেতাদের জরুরি শীর্ষ সম্মেলন। এই সম্মেলনে কাতারের প্রতি সমর্থন জানাতে একজোট হয়েছেন আরব লীগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলো। গত সপ্তাহে দোহায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি হামলায় পাঁচজন সদস্য নিহত হলেও শীর্ষ নেতারা অক্ষত রয়েছেন। এ হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে, যা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের সম্পর্কে নতুন টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে। ২০২০ সালে আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল।

রোববার বৈঠকে বসেন আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং খসড়া প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত বলেন, “এই সম্মেলনের বার্তা হলো কাতার একা নয়, আরব ও ইসলামি দেশগুলো তার পাশে রয়েছে।” ৯ সেপ্টেম্বরের হামলার পরও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কাতারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কাতারকে হামাস নেতাদের বহিষ্কার অথবা বিচারের মুখোমুখি করতে হবে, নতুবা ইসরায়েল নিজেরাই ব্যবস্থা নেবে।

কাতার গত দুই বছর ধরে গাজা যুদ্ধের অবসানে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশটি অভিযোগ করছে, ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করছে এবং নেতানিয়াহু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছেন। দোহায় ইসরায়েলি হামলায় কাতারের নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যও নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এ ধরনের হামলা ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেয় না। তিনি কাতারকে “ঘনিষ্ঠ মিত্র” আখ্যা দিয়ে বলেন, দেশটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কঠোর পরিশ্রম করছে। যদিও হামাসকে নির্মূল করাকে তিনি সঠিক লক্ষ্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে ট্রাম্প আশ্বস্ত করেছেন যে এ ধরনের হামলা কাতারের মাটিতে আর ঘটবে না।

নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, কাতারে অবস্থানরত হামাস নেতাদের নির্মূলের মাধ্যমেই গাজায় বন্দি জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধের সমাপ্তি সম্ভব। এদিকে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে স্থানীয় হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নেওয়া হয়। বর্তমানে হামাসের হাতে এখনও ৪৮ জন জিম্মি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে বন্দিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কাতার।