০১:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশে পোশাক খাতে নতুন সম্ভাবনা

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক এক নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পোশাকে যদি ২০ শতাংশ বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর আরোপিত ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চেয়েছে—কোন প্রক্রিয়া বা ফর্মুলায় কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং ট্রেসেবিলিটি যাচাই করা হবে।

১৫ সেপ্টেম্বর গুলশানে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত বৈঠকে এই বিষয়টি আলোচনায় আসে। বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, সহ-সভাপতি রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক আবদুস সালাম এবং এফটিএ অ্যান্ড পিটিএ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইউএসটিআরের সহকারী প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ। বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ও লেবার অ্যাটাশে লীনা খানও উপস্থিত ছিলেন।

বিজিএমইএ সভাপতি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ২০ শতাংশ ট্যারিফ সুবিধা পেয়েছে। তবে বাস্তবে গড় এমএফএন শুল্ক ১৬.৫ শতাংশ এবং অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক মিলে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬.৫ শতাংশ। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

তিনি শুল্ক কমাতে ‘স্ট্যাকিং মেথড’ প্রয়োগের প্রস্তাব দেন। তাঁর মতে, এই কৌশল শুল্কের বোঝা কমানোর পাশাপাশি মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও বাড়াবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল জানায়, ইউএস কাস্টমস বর্তমানে কাঁচামাল ব্যবহারের বিষয়টি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এ সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী নিয়েও আলোচনা হয়। মার্কিন প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ্রম আইন সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি এ ক্ষেত্রে আইএলও’র গাইডলাইন অনুসরণের পরামর্শ দেন।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাঁর বোর্ড শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৮১টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। শিল্পের বাস্তবতা, কর্মসংস্থান ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বিবেচনায় এনে সংশোধনের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মার্কিন প্রতিনিধিদল আলোচনায় সন্তোষ প্রকাশ করে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশে পোশাক খাতে নতুন সম্ভাবনা

প্রকাশিত হয়েছে: ০৮:০৫:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক এক নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পোশাকে যদি ২০ শতাংশ বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর আরোপিত ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জানতে চেয়েছে—কোন প্রক্রিয়া বা ফর্মুলায় কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং ট্রেসেবিলিটি যাচাই করা হবে।

১৫ সেপ্টেম্বর গুলশানে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত বৈঠকে এই বিষয়টি আলোচনায় আসে। বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, সহ-সভাপতি রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, পরিচালক আবদুস সালাম এবং এফটিএ অ্যান্ড পিটিএ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান লুৎফে এম আইয়ুব উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ইউএসটিআরের সহকারী প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ। বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ও লেবার অ্যাটাশে লীনা খানও উপস্থিত ছিলেন।

বিজিএমইএ সভাপতি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ২০ শতাংশ ট্যারিফ সুবিধা পেয়েছে। তবে বাস্তবে গড় এমএফএন শুল্ক ১৬.৫ শতাংশ এবং অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক মিলে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৬.৫ শতাংশ। এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

তিনি শুল্ক কমাতে ‘স্ট্যাকিং মেথড’ প্রয়োগের প্রস্তাব দেন। তাঁর মতে, এই কৌশল শুল্কের বোঝা কমানোর পাশাপাশি মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও বাড়াবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল জানায়, ইউএস কাস্টমস বর্তমানে কাঁচামাল ব্যবহারের বিষয়টি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এ সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬-এর সংশোধনী নিয়েও আলোচনা হয়। মার্কিন প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শ্রম আইন সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি এ ক্ষেত্রে আইএলও’র গাইডলাইন অনুসরণের পরামর্শ দেন।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাঁর বোর্ড শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ৮১টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। শিল্পের বাস্তবতা, কর্মসংস্থান ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বিবেচনায় এনে সংশোধনের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মার্কিন প্রতিনিধিদল আলোচনায় সন্তোষ প্রকাশ করে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে।