
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাচ্ছেন। তিনি ২৬ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের সাধারণ আলোচনা পর্বে ভাষণ দেবেন। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার মধ্যে সৃষ্ট আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং গত এক বছরে সরকারের গৃহীত সংস্কারগুলোর কথা বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরবেন। তিনি আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিও ব্যক্ত করবেন। সরকারের বর্তমান অগ্রাধিকার হলো জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়ন এবং সুষ্ঠুভাবে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা, যা তিনি তার বক্তৃতায় উপস্থাপন করবেন।
তৌহিদ হোসেন আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকা, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু ন্যায়বিচার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের চ্যালেঞ্জ, উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সম্পদ পাচার রোধ, নিরাপদ অভিবাসন এবং জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তির টেকসই হস্তান্তরের মতো বিষয়গুলো স্থান পাবে। ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসও তার আলোচ্য বিষয় হবে।
এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তার মতে, এর প্রধান কারণ হলো এবারই প্রথমবারের মতো ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত মাসে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত সংলাপের সফলতাই এই উচ্চপর্যায়ের সভা আয়োজনের পথ সুগম করেছে। বিশ্বে নতুন সংকটের উদ্ভব সত্ত্বেও বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রাসঙ্গিক রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নিউইয়র্ক সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিবের স্বাগত অভ্যর্থনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির অভ্যর্থনাসহ বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে নতুন বৈঠক যোগ হওয়া বা সময়ের অভাবে কোনো বৈঠক বাদ পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।