
মানুষের জীবন পথচলায় ভুল-ত্রুটি অনিবার্য। কখনো অজান্তে, কখনো অনিচ্ছায় আমরা পাপের আঁধারে হারিয়ে যাই। কিন্তু ইসলামের আলো আমাদের দেখায় একটি উজ্জ্বল পথ—তাওবা ও ইস্তেগফার, যা শুধু গুনাহের ক্ষমা নয়, বরং অন্তরের শান্তি, হৃদয়ের প্রশান্তি ও জীবনের প্রকৃত কল্যাণের দ্বার খুলে দেয়।যেমন নদী নিজের স্রোতকে বারবার পুনর্নবীকরণ করে, তেমনি তাওবা ও ইস্তেগফার মানব জীবনের ম্লান দিকগুলোকে তাজা করে, মনকে স্বচ্ছ করে। প্রতিটি ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ হল এক ধাপ আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার, এক মুহূর্তের শুদ্ধির যাত্রা।
কোরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
“আর যারা পাপ করেছে, পরে তারা তাওবা করে, তারা জানুক আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াশীল। সূরাআন–নিসা৪:১৭ .
আল্লাহ সূরাআশ-শুরাএর ২৫ নং আয়াতে বলেন:
“সকলেই আপনার প্রভুর প্রতি তাওবা করুক, যাতে তিনি আপনাদেরকে সুখী জীবন দান করেন।”
এটি প্রমাণ করে যে, তাওবা শুধুমাত্র পাপের ক্ষমা নয়, বরং জীবনে বরকত ও সাফল্য আনার মাধ্যম।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“যে ব্যক্তি রাতে গুনাহ করে, এবং দিনে তাওবা করে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।” (সহীহ বুখারী)
আরেকটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে:
“ইস্তেগফার প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রধান মাধ্যম। প্রতিদিন অন্তত তিরিশ বার ইস্তেগফার করা উচিত।” (সহীহ মুসলিম)
তাওবার বাস্তব প্রভাব এবং করণীয়:
- মন ও হৃদয় শান্ত থাকে।
- নেক ও সৎকর্মের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন হয়।
- অতীতের ভুল থেকে মুক্তি পায়।
- প্রতিদিন অন্তত একটি সময় নির্ধারণ করে তাওবা ও ইস্তেগফার করুন।
- গুনাহকে পুনরাবৃত্তি না করার দৃঢ় সংকল্প নিন।
- অন্তরের খারাপ অভ্যাস পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন।
তাওবা ও ইস্তেগফার কেবল ধর্মীয় নিয়ম নয়; এটি আধ্যাত্মিক মুক্তি, অন্তরের প্রশান্তি এবং জীবনের প্রগাঢ় সৌন্দর্যের চাবিকাঠি। প্রতিটি মুসলিমের জন্য এটি একটি অনাবিল দুঃসাহসিক যাত্রা—পাপের অন্ধকার থেকে আল্লাহর আলোয় ফিরে আসার যাত্রা।