০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ড্রোন হামলায় রাশিয়ার যুদ্ধ আরও বাড়ছে: জেলেনস্কির সতর্কবার্তা

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপকে সতর্ক করে বলেছেন, সাম্প্রতিক ড্রোন আক্রমণ রাশিয়ার যুদ্ধকে “আরও বৃদ্ধি” করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত একটি নিরাপত্তা শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে ৫০টিরও কম ইউরোপীয় দেশের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি ডেনমার্কে রহস্যময় ড্রোন উড়ান এবং এস্তোনিয়া ও পোল্যান্ডে রাশিয়ার বিমান হামলার ঘটনায় ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। জেলেনস্কি বলেন, “ইউরোপজুড়ে ড্রোন ঘটনার স্পষ্ট বার্তা হচ্ছে রাশিয়া যুদ্ধকে আরও বাড়াতে সাহসী হয়ে উঠেছে। এটি শুধু ইউক্রেনের বিষয় নয়, বরং ইউরোপ ও পশ্চিমা ঐক্য ভাঙাই রাশিয়ার মূল লক্ষ্য।”

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ইউরোপ “হিস্টিরিয়া ছড়াচ্ছে” এবং রাশিয়া কোনো হুমকি তৈরি করছে না। তিনি ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণের দিকে ইঙ্গিত করে সতর্ক করেছেন, মস্কো “সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ” প্রতিক্রিয়া জানাবে।

ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা “ড্রোন প্রাচীর” গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী রুশ ড্রোন ধ্বংস করা হবে। রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোসুর ড্যানও সতর্ক করে বলেছেন, তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করা পরবর্তী ড্রোন ভূপাতিত করা হবে।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বছরে গড়ালে মস্কোর ওপর চাপ বজায় রাখা এবং কিয়েভকে সহায়তা নিশ্চিত করা ইউরোপের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। ম্যাক্রোঁ রাশিয়ার তেল রপ্তানির জন্য ব্যবহৃত তথাকথিত “ছায়া নৌবহর” ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা মস্কোর যুদ্ধ অর্থায়নের প্রধান উৎস। ফ্রান্স ইতোমধ্যে এ নৌবহরের একটি কালো তালিকাভুক্ত ট্যাঙ্কার আটক করেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদ ব্যবহার করে ১৪০ বিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ তহবিল গঠনের প্রস্তাব বিবেচনা করছে, যা ইউক্রেনের বাজেট ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। তবে বেলজিয়াম এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে, কারণ দেশটির আশঙ্কা, এতে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাতে পারে এবং রাশিয়ার পাল্টা প্রতিশোধের ঝুঁকি বাড়বে।

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট ডি ওয়েভার বলেছেন, “আমরা অজানা জলে পা দিচ্ছি। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।” তিনি ইইউ নেতাদের কাছ থেকে স্পষ্ট নিশ্চয়তা চান যে সম্ভাব্য রুশ প্রতিশোধ মোকাবেলায় বেলজিয়ামকে একা ফেলে দেওয়া হবে না।

ইইউ কমিশন প্রধান উরসুলা ভন ডের লেইন জানিয়েছেন, এই ঝুঁকি শুধু বেলজিয়ামের নয়, পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের। তিনি দ্রুত এ বিষয়ে আলোচনা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ট্যাগ

ড্রোন হামলায় রাশিয়ার যুদ্ধ আরও বাড়ছে: জেলেনস্কির সতর্কবার্তা

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউরোপকে সতর্ক করে বলেছেন, সাম্প্রতিক ড্রোন আক্রমণ রাশিয়ার যুদ্ধকে “আরও বৃদ্ধি” করার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত একটি নিরাপত্তা শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে ৫০টিরও কম ইউরোপীয় দেশের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি ডেনমার্কে রহস্যময় ড্রোন উড়ান এবং এস্তোনিয়া ও পোল্যান্ডে রাশিয়ার বিমান হামলার ঘটনায় ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। জেলেনস্কি বলেন, “ইউরোপজুড়ে ড্রোন ঘটনার স্পষ্ট বার্তা হচ্ছে রাশিয়া যুদ্ধকে আরও বাড়াতে সাহসী হয়ে উঠেছে। এটি শুধু ইউক্রেনের বিষয় নয়, বরং ইউরোপ ও পশ্চিমা ঐক্য ভাঙাই রাশিয়ার মূল লক্ষ্য।”

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ইউরোপ “হিস্টিরিয়া ছড়াচ্ছে” এবং রাশিয়া কোনো হুমকি তৈরি করছে না। তিনি ইউরোপের ক্রমবর্ধমান সামরিকীকরণের দিকে ইঙ্গিত করে সতর্ক করেছেন, মস্কো “সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ” প্রতিক্রিয়া জানাবে।

ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা “ড্রোন প্রাচীর” গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইউরোপীয় আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী রুশ ড্রোন ধ্বংস করা হবে। রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোসুর ড্যানও সতর্ক করে বলেছেন, তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করা পরবর্তী ড্রোন ভূপাতিত করা হবে।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বছরে গড়ালে মস্কোর ওপর চাপ বজায় রাখা এবং কিয়েভকে সহায়তা নিশ্চিত করা ইউরোপের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। ম্যাক্রোঁ রাশিয়ার তেল রপ্তানির জন্য ব্যবহৃত তথাকথিত “ছায়া নৌবহর” ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা মস্কোর যুদ্ধ অর্থায়নের প্রধান উৎস। ফ্রান্স ইতোমধ্যে এ নৌবহরের একটি কালো তালিকাভুক্ত ট্যাঙ্কার আটক করেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার হিমায়িত সম্পদ ব্যবহার করে ১৪০ বিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ তহবিল গঠনের প্রস্তাব বিবেচনা করছে, যা ইউক্রেনের বাজেট ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। তবে বেলজিয়াম এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে, কারণ দেশটির আশঙ্কা, এতে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারাতে পারে এবং রাশিয়ার পাল্টা প্রতিশোধের ঝুঁকি বাড়বে।

বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট ডি ওয়েভার বলেছেন, “আমরা অজানা জলে পা দিচ্ছি। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।” তিনি ইইউ নেতাদের কাছ থেকে স্পষ্ট নিশ্চয়তা চান যে সম্ভাব্য রুশ প্রতিশোধ মোকাবেলায় বেলজিয়ামকে একা ফেলে দেওয়া হবে না।

ইইউ কমিশন প্রধান উরসুলা ভন ডের লেইন জানিয়েছেন, এই ঝুঁকি শুধু বেলজিয়ামের নয়, পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের। তিনি দ্রুত এ বিষয়ে আলোচনা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।