
নির্বাচন কমিশনের প্রতীক তালিকায় মুলা-বেগুনসহ হাস্যকর প্রতীক রাখা তাদের রুচিবোধেরই প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বিকেলে পঞ্চগড়ের শের-ই-বাংলা পার্কে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
“যে ধরনের প্রতীক মানুষের হাসির খোরাক জোগায়, তা নির্বাচন কমিশনের তালিকায় কীভাবে থাকে? এটা তাদের রুচিবোধেরই প্রকাশ। দেশে কি প্রতীকের অভাব পড়েছে?”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনেরই ঠিক করা উচিত কোন প্রতীক থাকা উচিত। আমাদের বলে দিতে হবে কেন? আশা করছি, কমিশন বিষয়টি সংশোধন করবে।”
এনসিপি নেতা জানান, তাদের দল শাপলা প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবে। তিনি বলেন, “সাদা বা লাল যে শাপলাই হোক, এমনকি শাপলার সঙ্গে অন্য কিছু যুক্ত হলেও আমাদের আপত্তি নেই।”
সারজিস আলম অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশন এখন স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয়েছে এবং কারও প্রভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।” তিনি বলেন, “আমরা তা মেনে নেব না, প্রয়োজনে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবো।”
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের মহানন্দা নদীর উজানে হঠাৎ করে নয়টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়ায় বাংলাবান্ধার একটি গ্রাম নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
তিনি বলেন,
“ভারত যদি প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে থাকতে চায়, তাহলে তাদের আচরণও হতে হবে প্রতিবেশীর মতো। মন চাইলে গেট খুলে দেওয়া বা আটকে রাখা বন্ধ করতে হবে। না হলে অ্যান্টি-ইন্ডিয়ান সেন্টিমেন্ট আরও বাড়বে, যা দুদেশের সম্পর্কের জন্য শুভ নয়।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন,
“সব দিন ভারতের নয়, বাংলাদেশেরও দিন আসবে। আমরা সমতা ও ভ্রাতৃত্বের আচরণ প্রত্যাশা করি। যতদিন শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে না দেওয়া হবে, ততদিন তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া পাবে না।”
বাংলাবান্ধার মহানন্দা নদীর পাড়ে বাঁধ নির্মাণে বিএসএফের বাধা ও গুলির প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন,
“বাংলাদেশের নদীর পাড়ে আমরা ব্লক দেব, আর বিএসএফ গুলি করবে—এই সাহস যদি এবার করে, তাহলে বিজিবি হোক বা বাংলাদেশের মানুষ, উপযুক্ত জবাব দেবে। ওরা তাদের পাশে যা করে আমরা কিছু বলি না, কিন্তু এখানেও তারা যেন কোনো স্পর্ধা না দেখায়।”
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি পরিবেশ উপদেষ্টা ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পেয়েছেন।
এনসিপি নেতা আরও জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার ১২০টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য এনসিপির উদ্যোগে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার উন্নয়ন বরাদ্দ আনা হয়েছে। অনুষ্ঠানের শেষে গণঅভ্যুত্থানসহ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত ও আহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এনসিপি পঞ্চগড় সদর উপজেলা সমন্বয়ক নয়ন তানবীরুল বারী, জাতীয় যুব শক্তির নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।